Study Centre

তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা ছিল ব্রাহ্মসমাজের তত্ত্ববোধিনী সভার মুখপত্র।ব্রাহ্মধর্মের প্রচার এবং তত্ত্ববোধিনী সভার সভ্যদের মধ্যে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষার উদ্দেশ্যে ১৮৪৩ সালের ১৬ আগস্ট (১ ভাদ্র, ১৭৬৫ শক) অক্ষয়কুমার দত্তের সম্পাদনায় তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা প্রথম প্রকাশিত হয়।

ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ বা কলেজ অফ ফোর্ট উইলিয়াম ব্রিটিশ ভারতের গভর্নর-জেনারেল লর্ড ওয়েলেসলি প্রতিষ্ঠিত একটি প্রাচ্যবিদ্যা শিক্ষাকেন্দ্র। ১৮০০ সালের ১০ জুলাই কলকাতার ফোর্ট উইলিয়াম চত্বরে এই কলেজ স্থাপিত হয়। এই প্রতিষ্ঠানে সহস্রাধিক সংস্কৃত, আরবি, ফার্সি, বাংলা, হিন্দি ও উর্দু ইংরেজিতে অনূদিত হয়।

শাহ মুহম্মদ সগীর আনুমানিক ১৪-১৫ শতকের কবি। মুসলিম কবিদের মধ্যে তিনিই প্রাচীনতম। তিনি গৌড়ের সুলতান গিয়াসউদ্দিন আজম শাহের রাজত্বকালে (১৩৮৯-১৪১১ খ্রিস্টাব্দে) ইউসুফ-জোলেখা কাব্য রচনা করেন। তাঁর কাব্যে ধর্মীয় পটভুমি থাকলেও তা হয়ে উঠেছে মানবিক প্রেমোপাখ্যান।

ভারতচন্দ্র অষ্টাদশ শতাব্দীর ভারতের বর্ধমান প্রদেশের ভুরসুট পরগণার পান্ডুয়া গ্রামে ১৭১২ খৃষ্টাব্দে জমিদার নরেন্দ্রনারায়ণ রায়ের ঔরসে ভবানী দেবীর গর্ভে চতুর্থ তথা কনিষ্ঠ সন্তান রূপে জন্মগ্রহণ করেন। জমির অধিকার সংক্রান্ত বিবাদ সূত্রে নরেন্দ্রনারায়ণ বর্ধমানের রাজা কীর্তিচন্দ্র রায়ের জননীকে কটুক্তি করায় রাজাজ্ঞায় বর্ধমানের সেনাপতি নরেন্দ্রনারায়ণের জমিদারি গ্রাস করে নিলে বাস্তুচ্যূত জমিদার নরেন্দ্রনারায়ণ পালিয়ে যান এবং ভারতচন্দ্র মণ্ডলঘাট পরগনার নওয়াপাড়ায গ্রামে মামার বাড়ীতে চলে আসেন।

ভাষার ক্রমবিবর্তেনের ধারায় মাগাধি প্রাকৃত বা মাগধি ভাষা থেকে উৎপন্ন হয়েছে ভোজপুরী, মৈথিলি, ওড়িয়া, বাংলা এবং অসমিয়া। ভারতের অঞ্চলের বিচারে এই ছয়টি ভাষার আদি রূপ হিসেবে দুটি ভাগে ভাগ করা হয়। এর পশ্চিমাঞ্চলের প্রাকৃতকে বলা হয় 'পশ্চিম-মাগধি'। আর পূর্বাঞ্চলের মাগধিকে বলা হয় পূর্বাঞ্চলীয় মাগধি।ড. শহীদুল্লাহর মতে: "গৌড়ীয় প্রাকৃত হতেই গৌড়ীয় অপভ্রংশের মাধ্যমে বাংলা ভাষার উদ্ভব হয়েছে "।এর তিনটি আঞ্চলিক রূপ আছে। এই রূপ তিনটি হলো- মধ্য মাগধী, উত্তরাঞ্চলীয় মাগধী এবং দক্ষিণাঞ্চলীয় মাগধী। এই ভাষার লিপি হলো 'দেবনাগরী'।

১২০২ সালে গৌড়ে তুর্কি আক্রমণের সময় থেকে ঊনবিংশ শতাব্দির মধ্যভাগ পর্যন্ত সময়কালকে বাংলা সাহিত্যের মধ্যযুগ বলা হয়। তবে ১২০১ থেকে ১৩৫০ সাল পর্যন্ত সময়কে বাংলা সাহিত্যের অন্ধকার যুগ বলা হয়। এ যুগে মসলমান ও তুর্কি আক্রমনের কারনে কবি সাহিত্যিক গন ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে থাকতেন। যার কারনে উল্লেখযোগ্য কোন সাহিত্য রচনা করতে পারেন নি তাঁরা। এই সময়ের সাহিত্য মূলতঃ ধর্মীয় বিষয় নির্ভর ছিল। প্রথমদিকের সমস্ত রচনাই ছিল পদ্যমূলক - গদ্যমূলক রচনা চালু হয় অনেক পরে। তুলোট কাগজে লেখা পুথির মাধ্যমে সাহিত্যচর্চা চলত।

ফকির গরীবুল্লাহ এদেশের অষ্টাদশ শতাব্দীর একজন সাহিত্যিক। ফকির গরীবুল্লাহ হুগলি জেলার (তখনকার বর্ধমান এর অংশ) বালিয়া পরগনার হাফিজপুর গ্রামের অধিবাসী। গরীবুল্লাহ সম্পর্কে তেমন তথ্য পাওয়া যায় না। তাঁর পিতার নাম শাহ্ দুন্দীর (সাহা দুন্দি)। আমির হামজা প্রথম পর্ব তাঁর রচনা। ফকির গরীবুল্লাহ-এর ইউসুফ-জোলেখা নামে একটি কাব্যগ্রন্থ আছে। মুহম্মদ শহীদুল্লাহ মনে করেন, কাব্যটি ১৭৬৫ সালের পর রচিত। ঐতিহাসিকরা বলেন,আঠারো শতকের মধ্যভাগে ফকির গরীবুল্লাহ কয়েকটি পুঁথি রচনা করেন। সেগুলো হচ্ছে: ইউসুফ জোলেখা, আমির হামজা, সোনাভান ও সতয়পীরের পুঁথি।

কবিগানের উৎপত্তি ও বিকাশ ১৮ শতাব্দীর প্রথমার্ধ থেকে ১৯ শতাব্দীর প্রথমার্ধ পর্যন্ত।

কবিগানের উল্লেখ্যযোগ্য কবিওয়াল গোঁজলাই গুই, ভরানী বেনে, হরু ঠাকুর, কেষ্টা মুচি, ভোলা ময়রা, এন্টনী ফিরিঙ্গি, নিতাই বৈরাগী। গোঁজলা গুঁই কবিগানের আদিগুরু ছিলেন। হর

কবি গানের ৪টি বিভাগ হলো বন্দনা, সখী সংবাদ, বিরহ ও খেউর।

কবিগানের উৎপত্তি ও বিকাশ ১৮ শতাব্দীর প্রথমার্ধ থেকে ১৯ শতাব্দীর প্রথমার্ধ পর্যন্ত। কবিগানের উল্লেখ্যযোগ্য কবিওয়াল গোঁজলাই গুই, ভরানী বেনে, হরু ঠাকুর, কেষ্টা মুচি, ভোলা ময়রা, এন্টনী ফিরিঙ্গি, নিতাই বৈরাগী প্রমুখ। কবিগানের আদিগুরু হিসেবে পরিচিত ছিলেন গোঁজলা গুঁই।

পদ্মাবতী একটি ঐতিহাসিক প্রণয় উপাখ্যান। চিতোরের রানী পদ্মীনির কাহিনী অবলম্বনে আলাওল পদ্মাবতী রচনা করেছিলেন।

সতী ময়না ও লোরচন্দ্রানী হিন্দি ভাষার হিন্দী কবি সাধন এর ‘মৈনাসত’ কাব্য অবলম্বনে রচিত।

মিয়ানমারের উত্তর-পশ্চিম সীমায় ও চট্টগ্রামের দক্ষিণে সমুদ্রের তীরে আরাকানের অবস্থান।আরাকানকে বাংলা সাহিত্যে ‘রোসাঙ্গ’ নামে অভিহিত করা হয়।রোসাঙ্গ রাজসভা ছিল মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যের উর্বর ক্ষেত্রভূমি।এ রাজসভার রাজারা হিন্দু হলেও কবিরা ছিলেন মুসলমান।
আরাকান রাজসভায় বাংলা সাহিত্যের উল্লেখযোগ্য সাহিত্যিক- দৌলত কাজী, আলাওল, কোরেশী মাগন ঠাকুর, মরদন, আব্দুল করিম খোন্দকর।

আরাকান রাজসভায় বাংলা সাহিত্যের উল্লেখযোগ্য সাহিত্যিক দৌলত কাজী, আলাওল, কোরেশী মাগন ঠাকুর, মরদন, আব্দুল করিম খোন্দকর।

শেখ ফয়জুল্লাহ (১৬শ শতক)  মধ্যযুগীয় বাংলা সাহিত্যের কবি। তাঁর জন্মস্থান নিয়ে মতভেদ আছে। বিভিন্ন মতে তাঁর জন্মস্থান হিসেবে পশ্চিমবঙ্গের বারাসত, দক্ষিণ রাঢ় এবং কুমিল্লার নাম উল্লিখিত হয়েছে।ফয়জুল্লাহর প্রধান তিনটি কাব্যগ্রন্থ হচ্ছে সত্যপীরবিজয় (১৫৭৫), গোরক্ষবিজয় ও গাজীবিজয়। এ ছাড়াও তিনি জয়নবের চৌতিশা, সুলতান জমজমা, রাগমালা ও পদাবলী কাব্য রচনা করেন। উনিশ শতকে ফয়জুল্লাহ নামে একজন দোভাষী শায়ের ছিলেন। তাঁর কাব্যের নাম সত্যপীর। তিনি হাওড়ার পাঁচনা গ্রামের অধিবাসী ছিলেন।

বাংলা সাহিত্যের মধ্যযুগে শিব উপাসক এক শ্রেণীর যোগী সম্প্রদায়ের নাথ ধর্মের কাহিনী অবলম্বনে রচিত কাব্যকে নাথ সাহিত্য বলা হয়।

মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যর মুসলমান কবিগণের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য অবদান রোমান্টিক প্রণয়োপাখ্যান। রোমান্টিক প্রনয় উপাখ্যান ধারার অন্যতম কবি শাহ মুহাম্মদ সগীর। বাংলা ভাষায় প্রথম মুসলমান কবি শাহ মুহাম্মদ সগীর।

বাংলা সাহিত্য বঙ্কিম চন্দ্র চট্টোপাধ্যায় 'সাহিত্য সম্রাট' হিসেবে পরিচিত। আর ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর 'গদ্যর জনক' হিসেবে পরিচিত।

'আলালের ঘরের দুলাল' বাংলা সাহিত্যের প্রথম উপন্যাস। প্যারীচাঁদ মিত্রের ছদ্মনাম টেকচাঁদ ঠাকুর। তিনি এই উপন্যাসটি রচনা করেন।

বহুল প্রচলিত ‘নানা দেশের নানান ভাষা, বিনে স্বদেশী ভাষা পুরে কি আশা’। এটির রচয়িতা নিধু বাবু। টপ্পা গান থেকে আধুনিক বাংলা সাহিত্যের গীতিকবিতার সুত্রপাত হয়।

চন্ডীদাস (আনু.১৪শ শতক)  মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যের প্রসিদ্ধ কবি। এ নামে চারজন কবির পরিচয় পাওয়া যায়; তাঁরা হলেন: বড়ু চন্ডীদাস, দ্বিজ চন্ডীদাস, দীন চন্ডীদাস ও চন্ডীদাস। এঁদের রচিত পদের ভণিতায় এ নামগুলি পাওয়া যায়। এ চারজন পরস্পর পৃথক ব্যক্তি, নাকি একজনেরই চারটি নাম; পৃথক হলে কে কখন আবির্ভূত হয়েছিলেন, একজন হলেই বা তাঁর সঠিক সময় কোনটা এসব নিয়ে বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে একটি সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে, যা ‘চন্ডীদাস সমস্যা’ নামে পরিচিত। আজ অবধি এ সমস্যার সমাধান হয়নি। তবে এঁদের মধ্যে বড়ু চন্ডীদাসকে মোটামুটিভাবে চিহ্নিত করা গেছে। তাঁর জন্ম পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার নান্নুর গ্রামে (মতান্তরে ছাতনা-বাঁকুড়া)। তাঁর পিতা দুর্গাদাস বাগচী ছিলেন বরেন্দ্র শ্রেণীর ব্রাহ্মণ।

কাঙ্গাল হরিনাথ তথা হরিনাথ মজুমদার (জন্ম: ১৮৩৩ - মৃত্যু: ১৬ এপ্রিল, ১৮৯৬) বাংলা লোকসংস্কৃতির অন্যতম ধারক ও বাহক হিসেবে পরিচিত বাউল সঙ্গীতের অন্যতম পথিকৃৎ ছিলেন। তিনি সর্বসমক্ষে ফকির চাঁদ বাউল নামেও পরিচিত ছিলেন।

ভারতচন্দ্র মধ্যযুগের শ্রেষ্ঠ ও শেষ কবি। ১৭৬০ খ্রিস্টাব্দে ভারতচন্দ্র রায়গুনাকারের মৃত্যুর সাথে সাথে মঙ্গলকাব্য যুগের অবসান ঘটে ।

আধুনিক বাংলা গদ্যের জনক ঈশ্বরচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়, বিদ্যাসাগর নামেই তিনি পরিচিত। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর বাঙালির মানস গঠনে, বাংলা ভাষা ও সাহিত্যর বিকাশে এবং মূল্যবোধ সৃষ্টিতে কালজয়ী ভুমিকা রেখে গেছেন।

মহাভারতের মূল ও আদি রচয়িতা কৃষ্ণ দ্বৈপায়ন ব্যাসদেব। মহাভারতের প্রথম অনুবাদক কবীন্দ্র পরমেশ্বর। কবি কাশীরাম দাস হলেন মহাভারতের বিখ্যাত ও জনপ্রিয় অনুবাদক।  

মহাভারতের মূল রচয়িতা কৃষ্ণ দ্বৈপায়ন ব্যাসদেব। মহাভারতের প্রথম অনুবাদক কবীন্দ্র পরমেশ্বর। কবি কাশীরাম দাস হলেন মহাভারতের বিখ্যাত ও জনপ্রিয় অনুবাদক।

রামায়ণের প্রথম অনুবাদক পনের শতকের কবি কৃত্তিবাস ওঝা। তিনি রামায়ণের প্রথম ও শ্রেষ্ঠ অনুবাদক। মূল ও আদি রচয়িতা বাল্মীকি ।  

রামায়ণের প্রথম অনুবাদক পনের শতকের কবি কৃত্তিবাস ওঝা। তিনি রামায়ণের প্রথম ও শ্রেষ্ঠ অনুবাদক। মূল রচয়িতা বাল্মীকি ।

চর্যাপদের রচয়িতা কাহ্নপা, লুইপা, কুক্কুরীপা, ভুসুকু, সরহপাদ সহ মোট ২৪ জন।চর্যাপদে কাহ্নপার রচিত পদ ১৩ টি

চর্যা সংগ্রহটিতে সর্বসমেত ৫১ টি চর্যাগীতি ছিল। ২৪,২৫,৪৮ সংখ্যক, চর্যার প্রাপ্ত পুঁথিতে সম্পূর্ন পাওয়া যায় নি। ২৩ সংখ্যক পদের শেষাংশ পাওয়া যায় নি। সর্ব মোট সাড়ে ৪৬ টি পদ পাওয়া যায়।

চর্যা সংগ্রহটিতে সর্বসমেত ৫১ টি চর্যাগীতি ছিল। ২৪,২৫,৪৮ সংখ্যক, চর্যার প্রাপ্ত পুঁথিতে সম্পূর্ন পাওয়া যায় নি। ২৩ সংখ্যক পদের শেষাংশ পাওয়া যায় নি। সর্ব মোট সাড়ে ৪৬ টি পদ পাওয়া যায়।

'বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ' থেকে প্রাপ্ত পুঁথিগুলো একত্র করে 'হাজার বছরের পুরান বাঙলা ভাষার বৌদ্ধগান ও দোহা' নামে চর্যাগীতিকা হরপ্রসাদ শাস্ত্রী কর্তৃক ১৯১৬ সালে প্রকাশিত হয়।

২৩ সংখ্যক পদের শেষাংশ পাওয়া যায় নি। ২৪,২৫,৪৮ সংখ্যক, চর্যার প্রাপ্ত পুঁথিতে সম্পূর্ন পাওয়া যায় নি।

২৪,২৫,৪৮ সংখ্যক, চর্যার প্রাপ্ত পুঁথিতে সম্পূর্ন পাওয়া যায় নি। ২৩ সংখ্যক পদের শেষাংশ পাওয়া যায় নি।

শ্রীরামপুর মিশন (১৮০০-১৮৪৫)  ভারতের প্রথম নিজস্ব প্রচারক সংঘ। ১৮০০ সালের ১০ জানুয়ারি উইলিয়ম কেরী ও ভ্রাতৃবৃন্দ এ মিশন প্রতিষ্ঠা করেন। মিশন হুগলি জেলার দুটি স্থান থেকে বাংলায় যীশুর বাণী প্রচার শুরু করে। এই জেলার ব্যান্ডেলে প্রথম ক্যাথলিক চার্চ প্রতিষ্ঠিত হয় (১৫৯৯)। এর দুশ বছর পর (১৮০০) শ্রীরামপুরে প্রোটেস্ট্যান্ট চার্চ গড়ে ওঠে।

খরোষ্ঠী ও ব্রাহ্মী 

প্রাচীন ভারতীয় লিপি দুটি। ব্রাহ্মী ও খরোষ্ঠী। ব্রাহ্মী লিপি তিন ভাগে বিভক্ত। পুর্বী লিপি, মধ্য ভারতীয় লিপি এবং পচশিমা লিপি। পুর্বী লিপির কুটিল রূপ হতে বাংলা লিপির উদ্ভব।

ইন্দো-ইউরোপীয়>শতম>আর্য>ভারতীয়>প্রাচীন ভারতীয় আর্য>প্রাচীন ভারতীয় কথ্য আর্য>প্রাচীন প্রাচ্য>মাগধী প্রাকৃত/গৌরীয় প্রাকৃত>মাগধী অপভ্রংশ/গৌরীয় অপভ্রংশ>বঙ্গ-কামরুপী>বাংলা।

বৈদিক ভাষা হতে বাংলা ভাষায় বিবর্তনের প্রধান ধারা তিনটি। যথাঃ
*প্রাচীন ভারতীয় আর্য ভাষা
*মধ্য ভারতীয় আর্য ভাষা
*নব্য ভারতীয় আর্য ভাষা

ভাষার ক্রমবিবর্তেনের ধারায় মাগাধি প্রাকৃত বা মাগধি ভাষা থেকে উৎপন্ন হয়েছে ভোজপুরী, মৈথিলি, ওড়িয়া, বাংলা এবং অসমিয়া। ভারতের অঞ্চলের বিচারে এই ছয়টি ভাষার আদি রূপ হিসেবে দুটি ভাগে ভাগ করা হয়। এর পশ্চিমাঞ্চলের প্রাকৃতকে বলা হয় 'পশ্চিম-মাগধি'। আর পূর্বাঞ্চলের মাগধিকে বলা হয় পূর্বাঞ্চলীয় মাগধি।সুনীতিকুমার চট্টোপধ্যায়ের মতে: " মাগধী প্রাকৃত থেকেই বাংলা ভাষার উদ্ভব হয়েছে" এবং "মাগধী প্রাকৃতে"র পূর্বতর রূপ হচ্ছে "গৌড় প্রাকৃত"। ড. শহীদুল্লাহর মতে: "গৌড়ীয় প্রাকৃত হতেই গৌড়ীয় অপভ্রংশের মাধ্যমে বাংলা ভাষার উদ্ভব হয়েছে "।এর তিনটি আঞ্চলিক রূপ আছে। এই রূপতিনটি হলো- মধ্য মাগধী, উত্তরাঞ্চলীয় মাগধী এবং দক্ষিণাঞ্চলীয় মাগধী। এই ভাষার লিপি হলো 'দেবনাগরী'।

ইন্দো-ইউরোপীয়>শতম>আর্য>ভারতীয়>প্রাচীন ভারতীয় আর্য>প্রাচীন ভারতীয় কথ্য আর্য>প্রাচীন প্রাচ্য>মাগধী প্রাকৃত/গৌরীয় প্রাকৃত>মাগধী অপভ্রংশ/গৌরীয় অপভ্রংশ>বঙ্গ-কামরুপী>বাংলা। সুতরাং বাংলা ভাষা ইন্দো-ইউরোপীয় আদি বা মূল ভাষা গোষ্ঠীর অর্ন্তগত।

বাংলা ভাষার প্রথম কবিতা সংকলন এবং বাংলা ভাষার আদি সাহিত্যিক নিদর্শন চর্যাপদ।

পাণিণি ছিলেন প্রাচীন ভারতের সংস্কৃত ভাষার একজন প্রথিতযশা grammarian বা বৈয়াকরণ। পাণিণি সংস্কৃত ভাষার সমন্বিত ব্যাকরণ গ্রন্থ রচনা করেন। সংস্কৃত ছিল তৎকালীন সময়ে ভারতীয় আর্যদের ধর্ম ও সাহিত্যে ধ্রুপদী ভাষা; পাণিণিকে একাধারে সংস্কৃত ভাষার জনক ও প্রতিষ্ঠাতার মর্যাদা দেওয়া হয়।সংস্কৃত’ শব্দের অর্থ সম্পূর্ন কিংবা নিখুঁত; এ কারণে ভাষাটিকে প্রাচীন ভারতে স্বর্গীয় ভাষাও ভাবা হত। যে কারণেএকে দেবভাষা বলা হত। পাণিণি পবিত্র দেবভাষা ও যোগাযোগের সাধারণ মাধ্যম হিসেবে আর্য ভাষার পার্থক্য তুলে ধরেছেন ‘অষ্ঠাধায়ী’ গ্রন্থে । পাণিণিরচিত ‘অষ্ঠাধায়ী’-র আটটি অধ্যায়; প্রতি অধ্যায়ের চারটি করে ভাগ। এসব অধ্যায়ে সংস্কৃত ব্যাকরণের সূত্র ও সংজ্ঞা নির্ধারণ করেছেন। সংস্কৃত ব্যাকরণের ১৭০০টি মূল ধারণা সম্বন্ধে লিখেছেন। যেমন বিশেষ্য, বিশেষন, পদ, ক্রিয়া, কারক, বিভক্তি ইত্যাদি। স্বরবর্ণ ও ব্যঞ্জনবর্ণে শ্রেণিবিভাগ করে দেখিয়েছেন। বাক্যের গঠন, যৌগবিশেষ্য, এমন ভাবে ব্যাখ্যা করেছেন যে মনেই হয় না ‘অষ্ঠাধায়ী’ গ্রন্থটি ২৫০০ বছর আগে লেখা।

প্রাচীন ভারতীয় আর্য, মধ্য ভারতীয় আর্য ও নব্য ভারতীয় আর্য

প্রাচীন ভারতীয় আর্য, মধ্য ভারতীয় আর্য ও নব্য ভারতীয় আর্য

বাংলা ভাষার উৎপত্তি সপ্তম শতাব্দীতে ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লার মতে, তবে বাংলা ভাষার উদ্ভব সম্পর্কে অধিকাংশ ভাষাবিদের মত দশম শতাব্দী ।

মধ্য যুগের বাংলা ভাষার পরিধি ১২০১-১৮০০ সাল পর্যন্ত, কিন্তু এর মধ্য ১২০১-১৩৫০ পর্যন্ত সময়কে বাংলা সাহিত্যর 'অন্ধকার যুগ' বলা হয়।

বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে যুগ প্রধানত তিনটি । ১) প্রাচীন যুগ বা আদি যুগ (৬৫০-১২০০), ২) মধ্য যুগ (১২০১-১৮০০), ৩) আধুনিক যুগ (১৮০১-বর্তমান পর্যন্ত)।

বাংলা  সাহিত্যের  যুগ বিভাগ মোট তিনটি ভাগে বিভক্ত

১. আদিযুগ (৬৫০-১২০০ খ্রী:)

২. মধ্যযুগ (১২০১-১৮০০ খ্রী:)

৩. আধুনিক যুগ (১৮০১ খ্রী: -বর্তমান)

বাংলা ভাষার প্রথম কবিতা সংকলন এবং বাংলা ভাষার আদি নিদর্শন চর্যাপদ রচিত হয়েছে পাল আমলে।

বাংলা সাহিত্যর ইতিহাস ১০০০ বছরের পুরনো বলে মনে করা হয়।

১৯০১-১৯৪০ সময়কাল বাংলা সাহিত্য রবীন্দ্র যুগ নামে পরিচিত।

ভাগ তিনটি হল-- ১) তুর্কি যুগ, ২) সুলতানী যুগ, ৩) মোগলাই যুগ।

ভাগ চারটি হল--১) প্রাক-চৈতন্য যুগ, ২)চৈতন্য যুগ, ৩) উত্তর- চৈতন্য যুগ, ৪) অষ্টাদশ শতাব্দী ।

পাঁচটি ভাগ হলঃক) প্রাচীন বা মুসলমান পূর্ব যুগ (৯৫০-১২০০); খ) তুর্কি বিজয়ের যুগ (১২০০-১৩০০), গ) আদি মধ্যযুগ বা প্রাক- চৈতন্য যুগ (১৩০০-১৫০০),ঘ)অন্ত মধ্যযুগ (১৫০০-১৮০০) আধুনিক বা ইংরেজি যুগ (১৮০০-বর্তমান)।

 প্রাচীন যুগ --(৬৫০--১২০০), মধ্যযুগ (১২০১--১৮০০ ), আধুনিক যুগ ১৮০১ থেকে বর্তমান পর্যন্ত।

প্রাচীন ভারতীয় লিপি দুটি। ব্রাহ্মী ও খরোষ্ঠী। ব্রাহ্মী লিপি তিন ভাগে বিভক্ত। পুর্বী লিপি, মধ্য ভারতীয় লিপি এবং পশ্চিমা লিপি। পুর্বী লিপির কুটিল রূপ হতে বাংলা লিপির উদ্ভব।

বাংলা ভাষার আদিস্তর ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়ের মতে, দশম থেকে চতুর্দশ শতাব্দী। ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লার মতে, সপ্তম থেকে দ্বাদশ শতাব্দী।

ইংরেজি সাহিত্য গীতিকবিতাকে Lyric বলে। ভাবের বৈচিত্র্য ও ছন্দের বৈচিত্র্যপূর্ণ প্রকাশ গীতিকবিতার বৈশিষ্ট। কবি বিহারীলাল চক্রবর্তী বাংলা সাহিত্য গীতিকবিতার প্রবর্তক।